No Image

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্ট


মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর

 

“লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন” শীর্ষক প্রকল্পের সার-সংক্ষেপ"

বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রের রূপান্তরে সরকার বিগত দশকসমূহে প্রভূত অগ্রগতি সাধন করেছে, যার ফলে শিক্ষায় লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু, কোভিড-১৯ অতিমারি শিক্ষার চলমান উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, বিশেষত মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিখন ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে ও নতুন শিক্ষাক্রমের চাহিদাপূরণে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রজেক্ট গৃহীত হয়েছে। 

এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল জাতীয় শিক্ষানীতি, মাস্টার প্লান ফর আইসিটি ইন এডুকেশন, এডুকেশন সেক্টর প্লান ২০২০/২১ - ২০২৪/২৫, বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ইত্যাদি দলিল ও পরিকল্পনায় শিক্ষার মানোন্নয়নে নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ অর্জন। বাংলাদেশের শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার রূপরেখা, যেমন: জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ (এসডিজি-৪) এর সাথে লেইস প্রজেক্টের কার্যক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ। লেইস প্রজেক্ট শিক্ষার এ রূপরেখাসমূহকে তার কার্যক্রমের অন্তভুর্ক্ত করার মাধ্যমে বৃহত্তর জাতীয় উন্নয়নকৌশল ও অগ্রাধিকারসমূহ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর অক্টোবর ২০২৩ হতে সেপ্টেম্বর ২০২৮ মেয়াদকালে লেইস প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। লেইস প্রজেক্ট ৩টি মূল লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হচ্ছে: মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ত্বরান্বিতকরণ ও ধরে রাখার হার বৃদ্ধি; মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণের দক্ষতা উন্নয়ন এবং মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা (secondary systems) ও সহনক্ষমতা (resilience) উন্নয়ন। 

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সহনক্ষমতা বিনির্মাণ ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় একটি বলিষ্ঠ শিক্ষা অবকাঠামো সৃজনের বৃহত্তর উদ্দেশ্যকে ব্যক্ত করে। এ সার্বিক পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্গত উপাদানসমূহের আন্তঃসম্পর্ককে চিহ্নিত করেছে এবং সামগ্রিকভাবে এসব বিষয়ে প্রচেষ্টা গ্রহণে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সার্বিকভাবে, মাধ্যমিক শিক্ষায় কোভিড-১৯ অতিমারির অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রজেক্ট একটি সার্বিক ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা হিসাবে বিবেচিত।
লেইস প্রজেক্টের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার অগ্রসরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক। কোভিড-১৯ এর ফলে সৃষ্ট শিখন ঘাটতির অভিঘাত হ্রাস এবং শিক্ষার্থীদের কার্যকর শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে অগ্রগতি নিশ্চিতকরণে শিখন তরান্বিতকরণ ও শিক্ষার্থী ধরে রাখার হার বৃদ্ধি এ প্রজেক্টের মূলভিত্তি হিসাবে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণকে সহজ করা এবং নতুন নতুন শিক্ষাদান পদ্ধতি আত্তীকরণে মূল ভূমিকা পালন করে থাকেন, বিশেষকরে নতুন শিক্ষাক্রম ও ব্লেন্ডেড লার্নিং এর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি গুরুত্ববহ।

লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রজেক্ট আশার বাতিঘররূপে আবির্ভূত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় এ প্রজেক্ট শিখন ঘাটতি পূরণ, নতুন শিক্ষাক্রম আত্তীকরণ ও শিক্ষায় ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতির উত্তরোত্তর ব্যবহারসহ অতিমারির কারণে শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে কাজ করবে।

প্রজেক্টটি ৩১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে একনেক (ECNEC) কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এ প্রজেক্টের প্রাক্কলিত ব্যয় 3304.08 কোটি বাংলাদেশী টাকা। বিশ্বব্যাংক ৩০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়ন অংশীদার হিসাবে বর্ণিত প্রজেক্টের সাথে যুক্ত হয়েছে। 300 মিলিয়ন ইউএস ডলারের মধ্যে ২৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ফলাফলভিত্তিক (Program for Result, PfR) ঋণ এবং অবশিষ্ট ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগ ঋণ (Investment Project Financing, IPF)। লেইস প্রজেক্টের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২২ নভেম্বর ২০২৩ খ্রি.।

 

প্রকল্পের বিবরণ:

০১।

প্রকল্পের নাম

:

লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্ট

০২।

উদ্যোগী মন্ত্রণালয়    

:

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়

০৩।

বাস্তবায়নকারী সংস্থা

:

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর

০৪।

প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় (কোটি টাকায়)

:

মোট: 3304.08  [প্রকল্প সাহায্য (বিশ্বব্যাংক): 3255.60  (৯৮.৫০%) ও জিওবি: 48.48  (১.৫০%)]

০৫।

প্রকল্পের মেয়াদ

:

অক্টোবর ২০২৩ হতে সেপ্টেম্বর ২০২৮ (০৫ বছর)

০৬।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য

:

মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থী ধরে রাখার হার (rate of retention) বৃদ্ধি এবং শিখন ত্বরান্বিতকরণ (learning acceleration)।

০৭।

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য

:

- মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ত্বরান্বিতকরণ এবং ধরে রাখার হার বৃদ্ধি।

- ২০২৮ সালে ৮ম শ্রেণিতে পাঠরত শিক্ষার্থীদের গণিত ও বাংলা বিষয়ের মৌলিক দক্ষতা (Basic Proficiency) যখাক্রমে ৬৫% এবং ৯০% এ উন্নীতকরণ [ বেইসলাইন ডাটা: ২৮.৭০% এবং ৬৬.৩%: NASS ২০২১]।
- মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত ধরে রাখার হার (Rate of Retention) ৭৪%-এ উন্নীতকরণ [বেইসলাইন ৭২% (২০২১): ব্যানবেইস ডাটা] 

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণের দক্ষতা উন্নয়ন। 

-    মাধ্যমিক শিক্ষকগণের দক্ষতা ১৫% বৃদ্ধি। [একটি বেইসলাইন স্টাডি সম্পন্ন হবে।]

মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা (secondary systems) ও সহনক্ষমতা (resilience) উন্নয়ন।

- মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গঠনকালীন মূল্যায়ন (Formative Assessment) এবং প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ (Remedial Measures) ব্যবস্থা উন্নয়ন। 
- ২০২৮ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৪০% শিক্ষার্থী ব্লেন্ডেড লার্নিং ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হবে। 
- ২০২৮ সালের মধ্যে কর্মসূচিভূক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ৩০% শিক্ষার্থী জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতামূলক মনোভাব পোষণ করবে। 

মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও মাদ্রাসা) শিক্ষার্থীগণের পাঠাভ্যাস ত্বরান্বিতকরণের লক্ষ্যে লাইব্রেরি উন্নয়ন।

০৮।

প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রম

:

(ক) স্থানীয় প্রশিক্ষণ  (মোট ৩৬৭৪৯০ জন), বৈদেশিক প্রশিক্ষণ (১৪৬৭ জন)।

- মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণের বিষয়ভিত্তিক প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং। (৫৪,৩৪০ জন)
- নতুন শিক্ষকগণের জন্য বেসিক ট্রেনিং। (২৭,১৮০ জন)
- মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের জন্য (স্কুল ও মাদ্রাসা) লীডারশীপ ট্রেনিং। (২৯,০০০ জন)
- শিক্ষার্থীগণের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, কাউন্সেলিং এবং বুলিং প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ। (১১৮,৯৮০ জন)
- ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ। (৬০,৪৮০ জন)
- লাইব্রেরিয়ানগণের জন্য প্রশিক্ষণ। (৩০,২২৫ জন)
- শিক্ষকগণের জন্য আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ। (৩০,৫৮৫ জন)
- জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধের বিষয়ে সচেনতা সৃষ্টির নিমিত্তি শিক্ষক প্রশিক্ষণ। (১১,০০০ জন) ইত্যাদি।

(খ) মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম [10340টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (6928 টি স্কুল + 341টি মাদ্রাসা)  প্রতিটিতে 2টি করে] স্থাপন।

(গ) লাইব্রেরি উন্নয়ন (29585 প্রতিষ্ঠান: স্কুল 18894, স্কুল ও কলেজ 1420 এবং মাদ্রাসা 9291)। 

(ঘ) মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং প্রতিরোধে পাইলট ভিত্তিতে সিটিটিভি ক্যামেরা স্থাপন (517 টি প্রতিষ্ঠান)।

(ঙ) ওয়ার্কশপ/সেমিনার/কনফারেন্স ।

(চ) প্রকল্পের কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়নে গবেষণা, স্টাডিজ ও সাব-কনট্রাক্ট (মোট ২০টি): 
    - ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এসেসমেন্ট (প্রকল্প মেয়াদে দু’বার), 
    - ই-কনটেন্ট তৈরি (ন্যূনতম ১০০০টি), 
   - অনলাইন মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন ব্যবস্থা উন্নয়ন, 
   - বেইসলাইন স্টাডি, ট্রেনিং ইমপ্যাক্ট স্টাডি ইত্যাদি। 

(ছ) অনুদান: মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের লাইব্রেরি উন্নয়ন এবং জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলায় সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন। 

 

 

মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার
সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ
রেহানা পারভীন
মহাপরিচালক, মাউশি (অতিরিক্ত দায়িত্ব)
প্রফেসর বি. এম. আব্দুল হান্নান
প্রকল্প পরিচালক
অধ্যাপক শিপন কুমার দাস

সর্বোমোট হিটঃ ৬৫৮৮০     আজকের হিটঃ১২

কারিগরি সহায়তায়: সপ্তক আইটি লি:। সাইটটি শেষ হাল-নাগাদ করা হয়েছে: ২০২৫-১১-০৫

//